মাগুরার মহম্মদপুরে স্কুলের নিয়োগের তথ্য সাংবাদিকদের দিতে নারাজ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস। এবিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন।

জানা যায়, মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের ধুলজোড়া চুড়ারগাতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪টি পদে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যোগসাজশে ঘুষ নেওয়া প্রার্থীদের চাকুরী দিতে নানা কৌশল অবলম্বন করে।এর মধ্যে দরখাস্তে ত্রুটির কথা বলে ঐ ইউনিয়নের ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নাঈমের ভাই মাসুদসহ কয়েকজনের দরখাস্ত বাতিল করা হয়।এরপর গত ২৭/০৮/২২ তারিখে নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য্য করে একদিন আগে পাতানো কয়জনকে রাতের অন্ধকারে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়।

এবিষয়টি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুষ দেওয়া প্রার্থীদের নামসহ সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। তাছাড়া নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য ৬ পরীক্ষার্থী জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলে বন্ধ হয়ে যায় ঐ দিনের নিয়োগ পরীক্ষা।

এতো কিছুর পরও ঐ ৪ জনকে নিয়োগ দিতে এ মাসের ১৬ তারিখে আবারও নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য্য করা হয়, ১৫ তারিখে এই নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের জন্য ঐ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের কয়েকজন জেলা প্রশাসকের নিকট নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের জন্য একটি দরখাস্ত দিলেও তাতে কোন কর্ণপাত করেনি প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত ও সভাপতি রসকান্ত। তারা ঘুষ নেওয়া সেই ৪ জনকেই নিয়োগ দেয়।

এর প্রেক্ষিতে এলাকাবাসী ও কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের কাছে জানানো হয় সভাপতি গঠন প্রক্রিয়া ও নিয়োগ প্রক্রিয়া, নিয়োগ পরীক্ষার নম্বর প্রদান সকল কিছুতেই নিয়ম ও আইনের তোয়াক্কা না করেই করা হয়েছে।সভাপতি হওয়ার যে যে যোগ্যতা শর্ত থাকা দরকার সেটাও নেই বর্তমান সভাপতির,কিন্তু প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত তার নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য তাকে সভাপতি করেন।

এ সবের সত্যতা যাচাই পূর্বক সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকেরা সভাপতি গঠনের রেজুলেশন তথ্য ও নিয়োগের রেজুলেশন এবং নম্বর পত্র দেখতে চায়,দেখানো তো দূরের কথা এর ফটোকপি প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্তের কাছে চাইলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে নানা তালবাহানা করে দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকে, কোন সময় বলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে আসছি এখন হবে না,কখনো বলে নেমন্তন্ন খেতে আসছি,আবার কখনো বলেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তার পর দিবো,এভাবে দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকে।

২৬/০৯/২২ইং তারিখে ৯ জন সাংবাদিক স্বাক্ষরিত তথ্য চেয়ে আবেদন করলে তিনি সেটা দেখে গ্রহণ না করে কাগজ কাছে নেই বলে সাংবাদিকদের ফিরিয়ে দেয়,ফিরিয়ে দেওয়ায় ঐ দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মহম্মদপুর বরাবর তথ্য চেয়ে আরেকটি আবেদন করেন তারা,এর পর ২৭/০৯/২২ইং তারিখে জেলা তথ্য কর্মকর্তা মাগুরা বরাবর, এবং ২৮/০৯/২২ইং তারিখ বুধবার ১০ জন সাংবাদিকের স্বাক্ষরিত একটি আবেদন পত্র জেলা শিক্ষা অফিসার মাগুরা বরাবর দেওয়া হয়েছে এবং ‘দৈনিক শ্যামবাজার পত্রিকা’র খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো চীফ মোঃ সুজন মাহমুদ বাংলাদেশ তথ্য অধিকার বিধিমালার ফরম ‘ক’ মোতাবেক একটি আবেদন পত্র জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর, মাগুরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে তথ্য চেয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

এবিষয়ে মাগুরা জেলা তথ্য অফিসার জনাব মোঃ রেজাউল করিম বলেন,শুধু সাংবাদিক হিসাবে না,তথ্য পাওয়ার অধিকার বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে, আমি তাদেরকে বলে দিবো দ্রুত আপনাদের তথ্য দিতে,যদি তারা তথ্য না দেয়,পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য আমি আপনাদের পাশে থাকবো।

এবিষয়ে মাগুরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ আলমগীর কবির বলেন, যে তথ্য গুলো আপনারা চেয়েছেন সেটা যাতে দ্রুত পেয়ে যান,সে বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং সহযোগিতার চেষ্টা করব।